Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

নাসার চন্দ্র মিশন 2024 | আর্টেমিস প্রোগ্রামের ওভারভিউ

 দীর্ঘ ৪৯ বছর আবার চাঁদে পা রাখতে চলেছে মানব সভ্যতা, জি: হ্যা: আমি কথা বলছি আর্টিমিস প্রোগ্র্যাম সম্পর্কে। এই প্রোগ্র্যাম এর মাধ্যমে প্রথম নারী ও পরবর্তী পুরুষ চাঁদের বুকে পা রাখতে চলেছে।


সূচীপত্র :




আর্টিমিস সম্পর্কে : 

আর্টিমিস হলো আমেরিকা সরকার কর্তৃক অর্থায়নে পরিচালিত আন্তর্জাতিক মানব স্পেসফ্লাইট প্রোগ্রাম যা ২০২৪ সালের মধ্যে বিশেষ করে চন্দ্র দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অবতরণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এই প্রোগ্র্যাম টি পরবর্তী মঙ্গল যাত্রার ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা পালন করবে। আর্টিমিস প্রোগ্র্যাম টি আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কমার্শিয়াল স্পেস ফ্লাইট ইনস্টিটিউট এর সাথে চুক্তিবদ্ধ। মিশনের বিভিন্ন অংশের ডেভেলপমেন্ট এর  জন্যে নাসার চুক্তিবদ্ধ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি কাজ করছে । নাসা এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছে, তবে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বগুলি মূল ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করে। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে একটি অভিযান দল গঠন করা এবং চাঁদে একটি টেকসই উপস্থিতি, বেসরকারী সংস্থাগুলির একটি চন্দ্র অর্থনীতি তৈরির ভিত্তি স্থাপন এবং অবশেষে মঙ্গলে মানুষ প্রেরণ অন্তর্ভুক্ত। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস এ তৎকালীন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পেস পলিসি নির্দেশিকা-১ এর  অনুমোদন দেন।



নাসার চন্দ্র মিশন 2024 | আর্টেমিস প্রোগ্রামের ওভারভিউ



যেসব মহাকাশ সংস্থা নাসার সাথে চুক্তিবদ্ধ :

নাসা তার আর্টিমিস প্রোগ্র্যাম এর সফলতার জন্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থা কাজ করছে। এগুলো হলো :





স্পেস স্যুট :

আর্টিমিস প্রোগ্র্যাম এর  ক্ষেত্রে দুইটি স্পেস স্যুট ব্যবহার করা হবে। এগুলো হলো :


  • এক্সপ্লোরেশন এক্সট্রাভেহিকুলার মোবিলিটি ইউনিট(xEMU): এটি হলো একটি অত্যাধুনিক স্পেস স্যুট যেটি চাঁদের পিষ্ঠে নভোচারী রা পরে নামবেন, এই স্যুট তে এপোলো স্যুট এর বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।


  • ওরিয়ন ত্রু সারভাইভাল সিস্টেম(OCSS):  এটি একটি ইমার্জেন্সি স্যুট, যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে অথবা রেসকিউ টীম ছাড়া নভোচারীদের মহাকাশে অথবা পৃথিবীর পিষ্টে নভোচারীদের জরুরি অবতরণ করতে হয় তখন এটি পরে নামবে। এটির রং কমলা হওয়ায় সহজেই উদ্ধার করতে সুবিধা হৰে।






এক্সপ্লোরেশন গ্রাউন্ড সিস্টেম(EGS):

এক্সপ্লোরেশন গ্রাউন্ড সিস্টেম হলো পৃথিবীর পিষ্ট থেকে আর্টিমিস ১ নিয়ন্ত্রণ করার কেন্দ্র। এখান থেকেই 

এক্সপ্লোরেশন গ্রাউন্ড সিস্টেম(EGS)
লঞ্চ চলাকালীন রকেট এবং মহাকাশযান প্রক্রিয়াজাতকরণ ও প্রবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় সিস্টেম ও সুবিধাদি বিকাশ ও পরিচালনা করার জন্য EGS প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। EGS শুধুমাত্র আর্টিমিস এর জন্যেই নয় বরং অন্নান্ন প্রজেক্ট এর  ক্ষেত্রে ও ব্যবহারের উপযোগী হিসাবে তৈরী করছে। 







স্পেস লঞ্চ সিস্টেম(SLS):

নাসার স্পেস লঞ্চ সিস্টেম, বা SLS, একটি সুপার-লিফট - লঞ্চ ভেহিকল  যা পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে মানব অনুসন্ধানের ভিত্তি সরবরাহ করে। অভূতপূর্ব শক্তি এবং ক্ষমতা সহ, SLS হল একমাত্র রকেট যা অরিয়ন, নভোচারী এবং কার্গোকে একটি মিশনে চাঁদে পাঠাতে পারে।
স্পেস লঞ্চ সিস্টেম(SLS)

আরও বেশি পেওলড ভর, আয়তনের ক্ষমতা এবং শক্তি সরবরাহ করে, SLS কে নমনীয় এবং বিকাশযোগ্য হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছে এবং চাঁদ, মঙ্গল, শনি এবং বৃহস্পতির মতো জায়গাগুলিতে রোবোটিক বৈজ্ঞানিক মিশন সহ পে-লোডের জন্য নতুন সম্ভাবনা উন্মুক্ত করবে।




ওরিয়ন :

ক্যাপসুলের মতো দেখতে রকেট এর উপরের দিকের অংশটির নাম ওরিয়ন। মহাকাশ যাত্রা করার সময় নভোচারীরা এই ক্যাপসুলেই অবস্থার করবে। এখানে তারা সুরক্ষিত থাকবে।


নাসার চন্দ্র মিশন 2024 | আর্টেমিস প্রোগ্রামের ওভারভিউ


বর্তমান মানব-সভ্যতার ক্রমবর্ধমান মহাকাশ এক্সপ্লোরেশন চাহিদা মিটাবে এই ওরিয়ন। এর মাধ্যমে কেবল চাঁদ বা মঙ্গোল নয় বরং আকাশের সবচে  বড়  তারা পর্যন্ত যাত্রা করা সম্ভব।




গেটওয়ে :

গেটওয়েটি চাঁদের প্রদক্ষিণকারী একটি কৃত্রিম উপগ্রহ  হবে যা চন্দ্র পৃষ্ঠে টেকসই, দীর্ঘমেয়াদী মানুষের প্রত্যাবর্তনের পাশাপাশি গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য একটি মঞ্চস্থ স্থান সরবরাহ করবে। এটি নাসার আর্টেমিস প্রোগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
গেটওয়ে


পাওয়ার অ্যান্ড প্রোপালশন এলিমেন্ট (পিপিই) একটি উচ্চ-শক্তি, ৬০ কিলোওয়াট সৌর বৈদ্যুতিক প্রপুলশন  মহাকাশযান যা গেটওয়ের জন্য শক্তি, উচ্চ-হারের যোগাযোগ, মনোভাব নিয়ন্ত্রণ এবং কক্ষপথ স্থানান্তর ক্ষমতা প্রদান করবে।




লুনার ল্যান্ডার :

আর্টেমিস প্রোগ্রামের অংশ হিসাবে নাসা আরও চাঁদের এক্সপ্লোরেশনের  জন্য নভোচারী প্রেরণের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে এবং এজেন্সি স্পেসএক্সকে প্রথম বাণিজ্যিক মানব ল্যান্ডারের বিকাশ অব্যাহত রাখতে বেছে নিয়েছে যা পরবর্তী দুটি আমেরিকান নভোচারীকে চন্দ্র পৃষ্ঠে নিরাপদে বহন করবে। সেই নভোচারীর মধ্যে অন্তত একজন চাঁদের প্রথম মহিলা হিসাবে ইতিহাস তৈরি করবেন। আর্টেমিস প্রোগ্রামের আর একটি লক্ষ্য চন্দ্র পৃষ্ঠে রঙের প্রথম ব্যক্তি অবতরণ অন্তর্ভুক্ত।
লুনার ল্যান্ডার


এজেন্সিটির শক্তিশালী স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেট তাদের চাঁদ কক্ষপথে বহু দিনের ভ্রমণের জন্য ওরিয়ন মহাকাশযানে আরোহণকারী চার নভোচারী উৎক্ষেপণ করবে। সেখানে দুই ক্রু  সদস্য চাঁদের পৃষ্ঠে তাদের যাত্রার চূড়ান্ত পর্বের জন্য স্পেসএক্স মানব অবতরণ ব্যবস্থায় (HLS) স্থানান্তর করবেন। প্রায় এক সপ্তাহ পৃষ্ঠতল গবেষণা  করার পরে, তারা লন্ডারকে তাদের স্বল্প ভ্রমণে কক্ষপথে ফিরে যাবে যেখানে তারা ওরিয়ন এবং তাদের সহকর্মীদের কাছে পৃথিবীতে ফিরে যাওয়ার আগে পূর্ণরায় মিলিত হবে।



উপসংহার :

আর্টিমিস ১ প্রজেক্ট টি মানব মহাকাশ এক্সপ্লোরেশন এর ক্ষেত্রে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। স্পেস টেকনোলজি নতুন এক যুগে পা রাখতে চলেছে । এই মিশন এ অনেক অ্যাডভান্সড টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে এবং এই প্রজেক্ট টি সফল হলে অনেক গুলো নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে এবং পরবন্তীতে নাসা আর্টিমিস ২ প্রজেক্ট পরিচালিত করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ